দেশে ফেরার স্বপ্ন এখনও অধরা বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি (Sonali Bibi) ও বাকি পাঁচজন শ্রমিকের জন্য। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের এখনই বাংলার মাটিতে পা রাখা সম্ভব হচ্ছে না। দিন গুনতে গুনতে প্রত্যাশার পথে নতুন বাধা তৈরি করেছে সীমান্তের ওপারের ছুটির দিন।
পুজোর ছুটিতে আটকে শুনানি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতে তাঁদের হাজিরা হওয়ার কথা থাকলেও দুর্গাপুজোর ছুটিতে আদালতের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নির্ধারিত দিনে শুনানি হয়নি। নতুন করে রবিবার তারিখ দেওয়া হতে পারে বলে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা জানিয়েছেন। শুনানির তারিখ পিছিয়ে যাওয়ায় অনিশ্চয়তায় আরও বেড়েছে বন্দি শ্রমিকদের উৎকণ্ঠা।
হঠাৎ বিদেশে ঠেলে দেওয়া
বীরভূমের মেয়ে সোনালি বিবি প্রায় ২০ বছর ধরে দিল্লির রোহিণীতে কাগজ কুড়োনো ও গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। গত জুন মাসে দিল্লি পুলিশ রহস্যজনকভাবে তাঁকে এবং পরিবারের আরও কয়েকজনকে আটক করে। পরে অনুপ্রবেশকারী বলে আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়ে। সেই থেকে শুরু হয় তাঁদের ভিনদেশে হাজত জীবন।
হাই কোর্টের ভরসা
এই ঘটনার পর বিষয়টি আদালতে পৌঁছয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত অগস্টে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা শুরু হয়। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের বেঞ্চে স্পষ্ট জানানো হয়— সোনালিদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণিত। কেন্দ্র সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয় চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার।
নতুন জটিলতা
কিন্তু সেই প্রক্রিয়া এগোনোর আগেই বাংলাদেশে তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন সংক্রান্ত মামলা শুরু হয়। ফলে কার্যত আইনি টানাপোড়েনের ফাঁদে আটকে গেছেন সকলে। এই অবস্থায় ফেরার পথ যতটা সহজ হওয়ার কথা ছিল, বাস্তবে ততটাই কঠিন হয়ে উঠছে।
উদ্বেগের ছায়া
সবচেয়ে বেশি চিন্তার বিষয় সোনালি বিবির শারীরিক অবস্থা। তিনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় পরিবার ও আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন, দেরি হলে এতে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে মা ও অনাগত সন্তানের জন্য। আদালতের নির্দেশ, কেন্দ্রের প্রক্রিয়া, সীমান্তের জটিলতা— সবকিছুর মাঝেই কোথায় শেষ হবে তাঁদের এই অন্তহীন প্রতীক্ষা, সেই উত্তর এখনও অজানা।