ভারতের কোটি কোটি চাকরিজীবীর অবসরের ভরসা হলো প্রভিডেন্ট ফান্ড। সম্প্রতি ইপিএফও এক গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা জারি করেছে, যা অনেকের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। নিয়ম মেনে সঞ্চয় ভাঙা না হলে শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, ভবিষ্যতে নতুন সমস্যাও তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থা। কিন্তু কী সেই শর্ত আর কী বিপদের মুখে পড়তে পারেন সদস্যরা—সেই কথাই এবার স্পষ্ট হচ্ছে।
ইপিএফও জানিয়েছে, প্রভিডেন্ট ফান্ড মূলত অবসরের পর আর্থিক নিরাপত্তার আঁচল। তাই অনুমোদিত কারণ, যেমন—চাকরি ছাড়ার পর দুই মাসের বেশি বেকারত্ব, অবসর, বাড়ি কেনা বা মেরামত, বকেয়া ঋণ পরিশোধ বা চিকিৎসার মতো সঙ্কটে আংশিক অর্থ তোলার অনুমতি আছে। এর বাইরে অন্য কোনো কারণে টাকা তুললে তা নিয়মবিরুদ্ধ বলে গণ্য হবে। বিশেষ করে পাঁচ বছরের চাকরি পূর্ণ হবার আগে ফান্ড ভাঙলে আয়কর ও টিডিএস কেটে নেওয়া নিশ্চিত।
সংস্থার নিয়ম আরও কড়া। উদাহরণস্বরূপ, কেউ বাড়ি নির্মাণের খরচের জন্য অর্থ নিলেন, অথচ পরে সেই টাকা অন্য খাতে ব্যয় করলেন—তাহলে ইপিএফও সেই অর্থ ফেরত চাইতে পারে সুদ-সহ। শুধু তাই নয়, EPF স্কিম, 1952-এর 68B(11) ধারায় স্পষ্ট বলা আছে—অপব্যবহার ধরা পড়লে তিন বছরের মধ্যে আর কোনও উত্তোলনের অনুমতি মিলবে না। পুরো অর্থ ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত নতুন করে ফান্ড ভাঙার সুযোগও রুদ্ধ থাকবে।
২৩ সেপ্টেম্বর ইপিএফও তাদের সোশ্যাল মিডিয়াতেও পরিষ্কারভাবে লিখেছে, “ভুল কারণে পিএফ উত্তোলন করলে Recovery হবে।” পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে শিগগিরই আসছে EPFO 3.0 ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে অনলাইন পরিষেবাগুলি হবে আরও দ্রুত ও স্বচ্ছ। এই সতর্কতার বার্তা আসার পরেই বোঝা যাচ্ছে, সংস্থা সদস্যদের শুধু সঞ্চয় রক্ষাই নয়, দায়িত্বশীলভাবে অর্থ ব্যবহারের দিকেও তাগিদ দিচ্ছে।
প্রভিডেন্ট ফান্ডকে অবসরের সোনার ভাণ্ডার বলা হয়। ভুল সিদ্ধান্ত নিলে সেই ভাণ্ডারই কাল হতে পারে। তাই ইপিএফও-র পরামর্শ স্পষ্ট—শিক্ষা, চিকিৎসা, বিয়ের খরচ বা বৈধ প্রয়োজনে ব্যবহার করুন ফান্ড। মনে রাখবেন, পিএফ কেবলমাত্র টাকার অঙ্ক নয়, এটি আজীবনের নিরাপত্তার বর্ম। অপব্যবহার করলে শুধু বর্তমান নয়, বার্ধক্যের দিনের ভরসাও হারাতে হতে পারে।