দীপাবলির আগে রেল কর্মীদের মুখে ফুটল স্বস্তির হাসি। সংসদের সাম্প্রতিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের এক বড় সিদ্ধান্ত রেল পরিবারের বাজেটে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য আনতে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরে কর্মীরা যে দাবিতে সরব ছিলেন, তারই এক অংশ মেনে নেওয়া হল বুধবার। তবে সিদ্ধান্তকে ঘিরে খুশি যেমন আছে, তেমনি অস্বস্তি ও দাবি-দাওয়ার স্বরও থেমে যায়নি।
মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকে অনুমোদন মিলেছে প্রায় ১,৮৬৬ কোটি টাকার প্রোডাক্টিভিটি লিঙ্কড বোনাসের (PLB)। এর ফলে এই উৎসব মরশুমে দেশের প্রায় ১০.৯০ লক্ষ রেল কর্মী বিশেষ আর্থিক সুবিধা পেতে চলেছেন। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, এই বছর বোনাসের অঙ্ক ধরা হয়েছে সর্বোচ্চ ৭৮ দিনের সমপরিমাণ, তবে একজন কর্মীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা ১৭,৯৫১ টাকা। এই বোনাসের আওতায় আসছেন ট্র্যাক মেন্টেনার থেকে শুরু করে লোকো পাইলট, স্টেশন মাস্টার, ট্রেন ম্যানেজার, টেকনিশিয়ান, সুপারভাইজার ও অন্যান্য গ্রুপ সি ও ডি কর্মচারীরা।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, কর্মীদের পরিশ্রম ও উৎপাদনশীলতাকে সম্মান জানাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, উৎসব চলাকালীন এই আর্থিক প্রণোদনা কর্মীদের শুধু স্বস্তিই দেবে না, বরং তাঁদের কর্মউৎসাহ আরও বাড়াবে। যদিও ঘোষণা নিয়ে সাধারণ রেল কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিলেও, সংগঠনের নেতাদের দাবি এখনও পুরোপুরি পূরণ হয়নি।
ইন্ডিয়ান রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ফেডারেশন (IREF) এবং অল ইন্ডিয়া রেলওয়ে এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (AIRF)-এর অভিযোগ, এখনও ষষ্ঠ বেতন কমিশনের ৭,০০০ টাকার ন্যূনতম বেতনের ভিত্তিতে বোনাস হিসাব করা হচ্ছে, অথচ সপ্তম কমিশনে সেই অঙ্ক ১৮,০০০ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। ইউনিয়নের বক্তব্য, পুরনো কাঠামো ধরে বোনাস নির্ধারণ অন্যায্য ও অযৌক্তিক। তাঁদের দাবি, মাসিক সীমা তুলে দিয়ে বর্তমান বেতন কাঠামো মেনেই বোনাস গণনা করতে হবে। পাশাপাশি, অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের জন্যও চাপ সৃষ্টি করছে তারা।
সব মিলিয়ে, উৎসবের আগে এই অর্থসাহায্য রেল কর্মীদের পরিবারে খানিকটা শান্তি আনবেই। তবে ইউনিয়নের নতুন দাবিগুলি যদি সরকার মান্যতা দেয়, তাহলে আগামী দিনে কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা আরও দৃঢ় হবে বলেই অনেকে আশা করছেন।