কলকাতায় (Kolkata) সোমবারের টানা বর্ষণে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জল জমে গেছিল একাধিক এলাকায়। শহরের রাস্তায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষের মনে আশঙ্কা দেখা দেয়—তাহলে কি এবার সবজি বাজারেও বাড়তি চাপ পড়তে চলেছে? দুর্গোৎসবের ঠিক আগে এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল ক্রেতাদের মাথায়।
সবজি বাজারে স্বস্তির বার্তা
তবে রাজ্যের টাস্ক ফোর্স জানাল, আশঙ্কার তেমন কিছু নেই। তাঁদের মতে, কলকাতার সবজি বাজারে বড়সড় কোনও প্রভাব ফেলবে না টানা বৃষ্টি। সংস্থার সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে জানান, যেসব জেলা থেকে শহরে আনাজ আসে সেই জেলাগুলোয় মূলত আবহাওয়ার তেমন গোলোযোগ দেখা যায়নি। ফলে উৎপাদনে সমস্যা হওয়ার সুযোগ নেই। সাথে আরও জানান, বাজারে যাতে কারসাজি করে দাম না বাড়ানো যায়, তার জন্য কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে।
কৃষকদের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে রাজ্যের টাস্ক ফোর্সের তরফ থেকে বনগাঁ এলাকার কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে। তাঁদের দাবি, দেরিতে বৃষ্টি আসলেও ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে একটানা বর্ষণের কারণে ট্রাক চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে, ফলে আগামী দুই-তিন দিন সরবরাহ কিছুটা কম হতে পারে বলে ধারণা।
ফুলচাষিদের দুশ্চিন্তা
তবে ভালো খবরের মাঝেও ভেসে উঠেছে এক নতুন দুশ্চিন্তার ছায়া। বিশেষত ফুল নিয়ে। দুর্গোৎসবের আগে যেখানে ফুলের চাহিদা সর্বোচ্চ, সেখানে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটে বহু ফুল খেত নষ্ট হয়েছে। গাঁদা, দোপাটি, অপরাজিতা, এমনকি রজনীগন্ধার মতো ফুল বৃষ্টির জলে ঝরে পড়ছে বলে জানাচ্ছেন সারা বাংলা ফুল চাষি সমিতির সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক। তাঁর শঙ্কা, উৎসবের মরসুমে ফুলের যোগান ঠিকঠাক রাখতে সমস্যায় পড়বেন তাঁরা। যদিও পদ্ম ফুলে তেমন ঘাটতি হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
ধান আর আলুর ছবি মিশ্র
অন্যদিকে, কৃষি ফ্রন্ট থেকেও মিলেছে মিলিজুলি ছবি। একদিকে আমন ধানের ফলন ভালো হওয়ার আশা করছেন অনেক কৃষক, অন্যদিকে ঘাটাল অঞ্চলে অতিবৃষ্টিতে ধানের জমি ডুবে যাওয়ার অভিযোগও সমানভাবে মিলেছে। পাশাপাশি, আলুচাষ নিয়েও সাময়িক দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা। সব মিলিয়ে, টানা বর্ষণের ফলে খাদ্যপণ্যে স্বস্তি থাকলেও উৎসবের সাজসজ্জায় চাপ আসতে চলেছে।