রাজ্যের মানুষের জন্য শারদোৎসব মানেই আনন্দের আবহ, তবে সঙ্গে থাকে বাড়তি খরচের চাপও। এই সময়টায় বহু মানুষের ভরসা হয়ে ওঠে সরকারের জনপ্রিয় সামাজিক প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। চলতি মাসে সেই প্রকল্পের ভাতা নিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে নবান্ন।
পরিবর্তিত সময়সূচি
সাধারণত মাসের শুরুতেই ভাতা উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। কিন্তু সেপ্টেম্বরের ভাতার টাকা এবার একটু দেরিতে পাওয়া যাবে। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, পুজোর আগে প্রশাসনিক কাজের চাপ – বিশেষত বেতন ও অন্যান্য আর্থিক লেনদেনের কারণে – শেষ সপ্তাহে একসঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই কিছুটা সময় পিছিয়ে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই ভাতা পৌঁছবে উপভোক্তাদের হাতে।
নবান্নের ব্যাখ্যা
প্রশাসনের দাবি, এই পরিবর্তনের ফলে ভাতার টাকা নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। কেবলমাত্র প্রদানের সময় একটু পিছিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাষায় জানানো হয়েছে, সুবিধাভোগীদের প্রাপ্য অর্থ কোনোভাবেই আটকে রাখা হবে না। বরং, শারদোৎসবের ব্যস্ততা কাটার পর নির্দিষ্ট দিনে অর্থ জমা পড়বে মহিলাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।
প্রকল্পের প্রেক্ষাপট
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালু হয়। বর্তমানে রাজ্যের আড়াই কোটি মহিলার মধ্যে প্রায় দেড় কোটি পরিবার এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। এখানে সাধারণ শ্রেণীর মহিলারা পান মাসে ১০০০ টাকা আর তপশিলি জাতি ও উপজাতি মহিলারা পান ১২০০ টাকা। এই সরাসরি ব্যাঙ্ক জমার পদ্ধতি প্রকল্পটিকে রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় পদক্ষেপে পরিণত করেছে।
চলতি সিদ্ধান্তের প্রভাব
যদিও এই মাসে অর্থপ্রদান পিছল, তবে সরকারি মহল মনে করছে, ভাতা হাতে পেলে উৎসব-পরবর্তী খরচ সামাল দিতে সুবিধা হবে। লক্ষ্মীপুজোর পরেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আসবে টাকার সংস্থান, ফলে উৎসবের মাঝেই আর্থিক দুশ্চিন্তা ঘিরে ধরবে না উপভোক্তাদের।
অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের ভাতা দেওয়া হবে ঠিকই, তবে তারিখের সামান্য হেরফের হচ্ছে মাত্র। চলতি বছরের পরের মাসে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পাওয়া যাবে এই ভাতা। শারদোৎসবের ভিড়ে এই সামান্য সময় পরিবর্তনে সুবিধাভোগীরা কিছুটা অপেক্ষা করবেন, তবে সরকারের প্রত্যাশা—ভাতা হাতে পাবার পর সেই অপেক্ষাকে আর বড় করে মনে পড়বে না।