কলকাতার বাজারে (Market) মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভিড় ছিল যথারীতি। কিন্তু ক্রেতাদের মুখে হাসির বদলে অসন্তোষই নজরে পড়ল বেশি। কেন্দ্র কয়েক সপ্তাহ আগে ঘোষণা করেছিল—নতুন জিএসটি হারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমবে, মাসিক খরচেও মিলবে স্বস্তি। অথচ বাজারে ঘুরে দেখা গেল, সেই প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন এখনো অধরাই, বিশেষ করে খুচরো ক্রেতাদের কাছে।
খুচরো বিক্রেতাদের টালবাহানা
শিয়ালদহ ও আশপাশের খুচরো বাজারে দোকানদাররা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, পুরোনো স্টক শেষ না করলে নতুন দামে বিক্রি সম্ভব নয়। বিস্কুট বা চানাচুরের মতো সামগ্রী বিল ছাড়াই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন, সেখানে নতুন করহার কার্যকর করার উপায়ই নেই বলে দাবি তাঁদের। লোকসানের মুখে পড়তে রাজি নয় কেউই। ব্যবসায়ীদের মতে, নতুন ট্যাগ লাগানো শুরু হতে আরও অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লেগে যাবে।
পাইকারিতে খানিক স্বস্তি
পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ছবিটা একটু ভিন্ন। তাঁদের হিসাবে, অনেক পণ্যে জিএসটি ১২ শতাংশ থেকে কমে ৫ শতাংশ হওয়ায় সামান্য হলেও স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে। যদিও পুরোনো দরে স্টক কেনার জের রয়ে গিয়েছে, হিসেব মেলাতে অসুবিধে হবে না বলেই দাবি তাঁদের। তবে সাবান, লোশন, কসমেটিক্স বা নোটবুকের মতো জিনিসপত্রে পুরোনো হারে কর কাটা চলছেই, তাই ভোক্তাদের স্বস্তি সীমিত।
প্রযুক্তির ঝক্কিতে শপিং মল
বড় শপিং মল ও ব্র্যান্ডের দোকানেও সোমবার ভোগান্তির ছবি স্পষ্ট। নতুন করহার সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করতে বেগ পেতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। সিস্টেম আপডেট না হওয়ায় বহু জায়গায় বিল তৈরি করতে দেরি হয়েছে। কাউন্টারে লাইন দীর্ঘ হয়েছে, কিছু ক্রেতাকে আধঘণ্টারও বেশি অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
ওষুধ ও খাদ্যে হতাশা
ওষুধের দোকানে পরিস্থিতি আরও জটিল। সেখানে ওষুধের দামে নতুন হার কার্যকর হয়নি বলেই অভিযোগ ক্রেতাদের। পুরোনো স্টকের নামে এখনও আগের দামে বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ ওষুধ। যাঁরা নতুন নিয়ম সম্পর্কে সচেতন, তাঁরা রসিদ দাবিও করছেন, কিন্তু তাতেও স্বস্তি মিলছে না। খাদ্যদ্রব্যের ক্ষেত্রেও একই ছবি—কিছু দোকানে পেস্ট্রি বা কেকের দামে সামান্য হেরফের হলেও বেশিরভাগ পণ্যই আগের দামে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতাদের ক্ষোভ
অনেক ক্রেতা প্রশ্ন তুলছেন—যদি নতুন ব্যবস্থার সুবিধা পেতে পুরোনো স্টক শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষাই করতে হয়, তবে আগেভাগে জাঁকজমক প্রচারের প্রয়োজন ছিল কী? সরকারের প্রতিশ্রুতি ও বাজারের বাস্তবতার মধ্যে তৈরি এই ফারাক এখন ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে খুচরো বাজারে।