অক্টোবরের শেষ দিকে রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য আসতে চলেছে বড় খবর। শিক্ষা সংসদের তরফে ইঙ্গিত মেলে, খুব শীঘ্রই ঘোষণা হতে চলেছে ফলাফল। সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানালেন, সম্ভাব্য তারিখ রাখা হয়েছে ৩১ অক্টোবরের আশপাশে, যদিও সামান্য দেরিও হতে পারে। অর্থাৎ, পুজোর আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই ছাত্রছাত্রীদের হাতে পৌঁছে যাবে অপেক্ষার ফল।
ফলপ্রকাশের প্রস্তুতি
পরীক্ষার খাতা প্রসেসিং নিয়েই এখন সবচেয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে সংসদ। প্রায় ৩৮–৩৯ লক্ষ OMR শিট কলকাতার কেন্দ্রীয় দফতরে পরীক্ষিত হচ্ছে। দ্রুত ফলাফল বের করে আনতে শিক্ষক-পরীক্ষকরা দিনরাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার সংসদের তরফ থেকে মনে করা হচ্ছে, আগের তুলনায় আরও দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। তবে সবকিছু নির্দিষ্ট করতে ২৫ সেপ্টেম্বর ফের বৈঠকে বসবেন সংসদের কর্তারা।
নতুন পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিক
প্রথমবারের মতো এবছর উচ্চ মাধ্যমিকে চালু হয়েছে সেমিস্টার সিস্টেম। ফলে একসঙ্গে দীর্ঘ সিলেবাসের চাপ সামলাতে হয়নি পরীক্ষার্থীদের। জোড়া বিতর্কিত বায়োলজির প্রশ্ন নিয়েও সংসদ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—যে পরীক্ষার্থী প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাকে উপযুক্ত নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি চালু হয়েছে অনলাইন এটেনডেন্স সিস্টেম, যার ফলে অনুপস্থিতির সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটাই কম।
পরীক্ষার্থীর উপস্থিতি
এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৬,৬০,৩৪৩ জন। এর মধ্যে ছেলে প্রায় ২.৯ লক্ষ এবং মেয়ে সাড়ে ৩.৬ লক্ষের কাছাকাছি। অনুপস্থিতির হার অতি নগণ্য—মাত্র ১০,৪৩৭ জন। সংসদের হিসেব অনুযায়ী উপস্থিতির হার দাঁড়িয়েছে ৯৮.৪২ শতাংশ, যা এক বলার মতো রেকর্ড।
শৃঙ্খলার ছবি
আরও আশার বিষয়, পরীক্ষাকেন্দ্রে শৃঙ্খলাভঙ্গের খবর এ বছর প্রায় ছিলই না। সর্বাধিক মাত্র তিনজন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল হয়েছে—দু’জন মোবাইল ব্যবহার করতে গিয়ে ধরা পড়ে, আর একজন ছাত্রীর দুর্ব্যবহারের জন্য। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম, যা সংসদের দাবি অনুযায়ী অনেকটা স্বচ্ছ ও নির্ঝঞ্ঝাট পরীক্ষা পরিচালনার প্রমাণ।
সব মিলিয়ে শিক্ষা সংসদের মতে, এবছরের পরীক্ষা তুলনামূলক অনেকটাই নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে। OMR শিট ব্যবহার এবং নিয়মকানুনে কড়াকড়ির কারণে পরীক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতাও ছিল স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য। এখন শুধু অপেক্ষা অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের। লক্ষাধিক পরীক্ষার্থীর চোখ সেই দিনটিতেই—কখন সংসদ ফল প্রকাশ করে আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠিয়ে দেয় তাঁদের হাতে।