স্বাস্থ্য ও জীবন বিমার খরচ নিয়ে দেশের কোটি মানুষের একটা দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ছিল—প্রিমিয়ামের ওপরে বসত মোটা করের বোঝা। অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকার সেই বোঝা খানিকটা সরাতে চলেছে। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হতে চলা এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে বিমা খরচের অঙ্কে আসতে পারে দৃশ্যমান পরিবর্তন। তবে এর পুরো প্রভাবটা কেমন হবে—সেটা নিয়ে দু’ধরনের হিসেব কষছে বিশেষজ্ঞ মহল।
কী বদলাচ্ছে
সরকার ঘোষণা করেছে, স্বাস্থ্য ও জীবন বিমার প্রিমিয়ামের ওপর আর কোনও জিএসটি দিতে হবে না। এতদিন বিমার প্রতি ১০০ টাকার ওপর গ্রাহককে অতিরিক্ত ১৮ টাকা কর গুনতে হত। এই বোঝা কেটে দিলে প্রিমিয়ামে তাত্ক্ষণিকভাবে স্বস্তি মিলবে গ্রাহকের। এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হলো স্বাস্থ্য ও জীবন বিমাকে আরও সাশ্রয়ী করে সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তোলা।
অন্দরের হিসেব
তবে সব কিছুই যে অনায়াসে সস্তা হয়ে যাবে, তা নয়। কারণ বিমা সংস্থাগুলো এতদিন তাদের খরচ—যেমন অফিস ভাড়া, এজেন্ট কমিশন বা বিদ্যুতের বিল—এসবের ওপর দেওয়া জিএসটি ফেরত পেত ‘ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট’-এর মাধ্যমে। নতুন ব্যবস্থায় সেই সুবিধা না থাকায় সংস্থাগুলির খরচ বাড়তে পারে। ফলত প্রিমিয়ামেও ৩–৫ শতাংশ পর্যন্ত সামঞ্জস্য আনার প্রয়োজন হতে পারে।
গ্রাহকের সাশ্রয়
সুতরাং, যদিও বিমার উপর থেকে জিএসটি উঠে গেল, কিন্তু প্রিমিয়াম সামান্য বাড়তেই পারে। তবে মোট বাঁচানো খরচ এই সামান্য বৃদ্ধির থেকে অনেক বেশি হবে, তাই সাধারণ মানুষের জন্য এটি একটি সুসংবাদই বলা যায়। অর্থাৎ সাধারণ গ্রাহকের খরচে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসবেই।
অতএব, স্বাস্থ্য ও জীবন বিমার খরচ সামান্য কমলেও বিমা কোম্পানিগুলোর অন্যান্য ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিক প্রভাব কিছুটা জটিল হতে পারে। বিমা সংস্থাগুলি তাদের হার তিন থেকে পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি করতে পারে। এই পরিবর্তনের গুরুত্ব বুঝতে হলে বিমার খরচ ও কর ব্যবস্থার সব দিক বিবেচনা করতেই হবে।
নিয়মিত স্বাস্থ্য বিমা এবং জীবন বিমার পরিকল্পনায় যাঁরা আছেন তাঁদের জন্য এই পদক্ষেপ বড় স্বস্তির খবর হতে চলেছে। অনেকদিন ধরেই কর মওকুবের দাবি উঠছিল দেশের নাগরিক মহল থেকে। সেই দাবি পূরণ করল সরকার, যার মূল লক্ষ্য বিমা পরিষেবাকে আরও সাশ্রয়ী করে প্রত্যেক পরিবারকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার আওতায় আনা।