নেপালের রাজনীতিতে খোলা হলো এক নতুন দিগন্ত। দীর্ঘদিনের প্রথা ভেঙে দেশটি পেল তার প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। নতুন এই দায়িত্ব নিলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কী। বিচারব্যবস্থায় নারী নেতৃত্বের ইতিহাস গড়ার পর এবার রাজনৈতিক মঞ্চে তিনি দেশের প্রথম মহিলা শাসক হিসেবে শপথ নিলেন। ৭২ বছর বয়সে এসে এই অভূতপূর্ব কৃতিত্ব অর্জন করলেন তিনি।
কয়েকদিন আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগ ঘিরে নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণের জন্য প্রথমে আলোচনায় উঠে আসে কাঠমান্ডুর জনপ্রিয় মেয়র ও শিল্পী বলেন্দ্র শাহের নাম। তবে জনআন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় সুশীলা কার্কীকেই। রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেলের উপস্থিতিতে তিনি অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। সেই সঙ্গেই নেপালের রাজনৈতিক ইতিহাসে শুরু হলো এক নতুন অধ্যায়।
এদিকে প্রতিবেশী ভারতও এই পরিবর্তনের বার্তা গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সুশীলাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন, নেপালের জনগণের শান্তি ও উন্নয়নে ভারত সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। নয়া দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও পরিষ্কার করে জানিয়েছে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের সঙ্গী হিসেবে নেপালের সঙ্গে ভারতের সহযোগিতা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সামাজিক মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘নেপালের নতুন অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ নিঃসন্দেহে স্মরণীয় ঘটনা। নেপাল ও বাংলা শুধু সীমান্ত নয়। নেপালের সঙ্গে বাংলার বন্ধন বহু পুরনো—সীমান্ত আর সংস্কৃতির মেলবন্ধন দুই অঞ্চলের মানুষকে কাছাকাছি এনেছে। তাই আমরা চাই সেই সম্পর্ক আরও গভীর হোক।’’
বিচার বিভাগের প্রথম নারী শীর্ষপদে বসে ইতিমধ্যেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন সুশীলা। এবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর পদক্ষেপ গোটা দেশের ভবিষ্যতের সঙ্গেই জড়িত। ভারতের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী—সবাই যখন তাঁর প্রতি আস্থা ও শুভকামনা জানিয়েছেন, তখন প্রশ্ন একটাই: সুশীলা কার্কীর হাতে নেপাল কি রাজনৈতিক স্থিতি ও নতুন দিশা খুঁজে পাবে? এখন সেখানেই দৃষ্টি সীমান্ত পেরিয়ে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার।