রাশিয়ার পূর্ব উপকূল শনিবার ভোরে প্রবলভাবে কেঁপে ওঠে এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে। আচমকাই মাটির তলায় সেই প্রচণ্ড ঝাঁকুনি অনুভূত হতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে। তবে ঠিক কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বা পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, তা নিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা জল্পনা।
ভূমিকম্পের তীব্রতা
ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার সকালে রিখটার স্কেলে ৭.৪ মাত্রার এই শক্তিশালী ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়। উৎসস্থল ছিল পেট্রোপাভলোভস্ক-কামাচাটস্কি শহর থেকে প্রায় ১১১ কিলোমিটার দূরে এবং ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। ফলে শক্তিশালী কম্পনের অভিঘাত ছড়িয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে।
সুনামির সতর্কতা
ভূমিকম্পের পরেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সম্ভাব্য সুনামি সতর্কতা জারি হয়। কম্পনের পরই উপকূল জুড়ে কয়েক মিটার উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়তে দেখা গেছে। সেভেরো-কুরিলস্ক শহরসহ আরও কিছু জায়গায় শুরু হয়েছে প্রশাসনিক তৎপরতা; নিরাপত্তার খাতিরে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়ে। তবে আন্তর্জাতিক সতর্কতা কমিটির তরফে কিছু ঘণ্টার মধ্যেই ঝুঁকি কিছুটা কম বলে জানানো হয়।
ক্ষয়ক্ষতির চিত্র
এখনও পর্যন্ত বড় ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে প্রশাসন জানাচ্ছে, সম্পূর্ণ পরিস্থিতি বুঝে ওঠার জন্য সময় লাগবে। উদ্ধারকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে, হাসপাতালগুলোতেও জারি হয়েছে সতর্কতা।
ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কামচাটকা উপকূল এমন একটি অঞ্চল যা বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় সিসমিক জ়োনের মধ্যে পড়ে। এই এলাকায় প্রায়ই কম্পন এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। ১৯৫২ সালে এখানেই ঘটেছিল ৯ মাত্রার ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প। এমনকী মাত্র মাস দুয়েক আগে জুলাইয়েই রেকর্ড করা হয়েছিল ৮.৮ মাত্রার কম্পন, যেখানে সুনামির সতর্কতা জারি হয়েছিল একাধিক দেশে।
বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ
অতএব প্রশ্ন উঠছে—ঘন ঘন এই প্রচণ্ড কম্পনের পরিপ্রেক্ষিতে কামচাটকার উপকূল আর কতটা নিরাপদ? প্রায় প্রতিদিন ছোট ছোট কাঁপন অনুভূত হলেও সাম্প্রতিক ধারাবাহিক শক্তিশালী ভূমিকম্প বিশেষ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় “রিং অফ ফায়ার”-এ এই প্রবণতা আগামী দিনে আরও তীব্র হতে পারে। তাই এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য সতর্কতা আর প্রস্তুতি ছাড়া বিকল্প নেই।