কলকাতা শহরে এক মর্মান্তিক ঘটনায় মুহূর্তেই শোক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়, যাঁকে নেটিজেনরা বরাবরই মাতৃত্বের আলোয় ভাসতে দেখেছেন, তিনি হারালেন তাঁর সদ্যজাত সন্তানকে। সেই আনন্দময় প্রতীক্ষা থেকে শুরু করে মাতৃত্বকালীন প্রতিটি মুহূর্ত ভাগ করে নিয়েও আজ দাঁড়িয়ে তিনি এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সামনে। আর এই মৃত্যুর জন্য সরাসরি চিকিৎসকের অবহেলাকেই দায়ী করছেন তিনি এবং তাঁর স্বামী অনির্বাণ।
ঘটনার পরপরই সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ায় যে চিকিৎসকের অবহেলাই এই মর্মান্তিক পরিণতির কারণ। যদিও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক শিবেন্দ্রনাথ দাস দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। ফলে কারও মতে চিকিৎসকের অবহেলা, আবার কারও কাছে সোহিনীর নিজের ব্যবহারের কারণেই ঘটেছে অকাল মৃত্যু।
এতদিনের নীরব থাকার পর অবশেষে কান্নাভেজা কণ্ঠে সোহিনী সামনে এসে বলেন, সন্তান হারানোর মতো আঘাত সামলাতেই যেখানে কষ্ট হচ্ছে, সেখানে তাঁকে নিজের যন্ত্রণা ব্যাখ্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। সোহিনীর অভিযোগ, চিকিৎসক প্রথম থেকেই গাফিলতি করেছেন। সন্তান নড়াচড়া কমে আসার পর দ্রুত পদক্ষেপ না নিয়ে, একের পর এক দেরি করানোই এই মৃত্যুর আসল কারণ। তাঁর স্বামীরও দাবি—প্রেসক্রিপশনের রিপোর্টে মায়ের শরীরে কোনো জটিলতা ছিল না, তবু জরুরিভাবে অস্ত্রোপচার করার বদলে আলস্য দেখান ডাক্তার।
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অভিযোগ হলো, সন্তান মারা যাওয়ার পরও শল্যচিকিৎসা করতে দেরি করেন ডাক্তার এবং সেই সময় মর্মাহত মায়ের উদ্দেশে অপমানজনক মন্তব্যও করেন।
পুরো ঘটনা সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। নিস্পাপ এক প্রাণের মৃত্যু ঘিরে এখন বড় প্রশ্ন, চিকিৎসকের অবহেলা কি সত্যিই এই পরিণতির জন্য দায়ী? না কি তার আড়ালে অন্য কোনো কারণ লুকিয়ে রয়েছে? তদন্তে এর সত্যতা প্রমাণিত হলে তবেই পরিষ্কার হবে, সোহিনীর মাতৃত্বহানির পেছনে প্রকৃত দোষী কে।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় একদিকে শোকস্তব্ধ পরিবার, অন্যদিকে চিকিৎসকের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছে নেটিজেনরা। সাধারণ মানুষের একটাই দাবি—নিরপেক্ষ তদন্ত হোক এবং প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসুক।