রাজ্যের পুলিশ বাহিনীতে যাঁরা সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন, তাঁদের নিয়ে এবার বড়সড় উদ্যোগ নিল রাজ্য পুলিশ। এখন পর্যন্ত এই দুই শ্রেণির কর্মীদের উচ্চতা, ওজন কিংবা বুকের মাপ কোথাও কেন্দ্রীভূতভাবে নথিভুক্ত ছিল না। ফলে প্রয়োজনের সময় অফিসারদের হাতে তথ্য আসছিল না। নবান্নের নির্দেশে এবার সেই ঘাটতি পূরণে নামল সদর দফতর।
জানা গেছে, প্রতিটি জেলা থেকে দ্রুত এই সংক্রান্ত তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশের শীর্ষ মহল থেকে। সংখ্যার হিসাবটা নেহাতই ছোট নয়। রাজ্য জুড়ে বর্তমানে দায়িত্বে রয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৭১৪ জন সিভিক ভলান্টিয়ার এবং ৩,৩৫১ জন ভিলেজ পুলিশ।
কিন্তু নিয়োগের সময় তাদের শারীরিক যোগ্যতার জন্য কোনও নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়নি। ফলে দায়িত্ব পালনের সময়ে অনেককে সমস্যায় পড়তে হয়ে। তাই নবীনদের জন্য যেমন উচ্চতা ও বুকের মাপ আবশ্যক করা হয়েছে, তেমনই সিভিক ও ভিলেজ পুলিশকেও সেই কাঠামোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তুতি চলছে।
তবে এখানেই শেষ নয়। সূত্রের খবর, কেবল শারীরিক তথ্য নথিভুক্ত করাই নয়— সিভিক ও ভিলেজ পুলিশের জন্য আরেকটি সুবিধার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে নবান্নে। সপ্তাহে এক দিন সবেতন ছুটি, বছরে অন্তত দশ দিনের ছুটি এবং সর্বোচ্চ ৫০ দিন পর্যন্ত ছুটি সঞ্চয় করার ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করা হয়েছে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে। জরুরি প্রয়োজনে যাতে তাঁদের উপর বাড়তি চাপ না পড়ে, সেই দিকেই তাকিয়ে এমন পদক্ষেপ।
অন্যদিকে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেওয়ার বিষয়েও এর তাৎপর্য রয়েছে। কনস্টেবল পদে বিপুল শূন্যপদের সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেখানে সিভিক ও ভিলেজ পুলিশের জন্য আলাদা ১০ শতাংশ নির্ধারিত করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। তাই কারা যোগ্য, আর কারা শারীরিক মানদণ্ড পূরণে অক্ষম, সেটা দ্রুত এক নথিতে জানা গেলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সদর দফতরের এক কর্তার কথায়, “এখন আর ফাইল ঘেঁটে খুঁজতে হবে না। প্রতিটি নাম, প্রতিটি তথ্য এক ক্লিকেই পাওয়া যাবে। এতে প্রশাসনিক কার্যকারিতা যেমন বাড়বে, তেমনই মাঠের কাজও সহজ হবে।”
অর্থাৎ, স্রেফ সহযোগী পুলিশ নয়, ধীরে ধীরে তাঁদেরও একটি সুসংগঠিত কাঠামোর মধ্যে আনার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। এতে একদিকে কর্মীদের কাজের মান বাড়বে, অন্যদিকে ভবিষ্যতের নিয়োগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতাও নিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তারা।