কলকাতার দুর্গোৎসবের আবহ থেকে শুরু হয়েছিল যাত্রা। ছোট্ট এক পরিবারের ভেতরের অভিমান আর পুনর্মিলনের কাহিনি, সেই ছবি এবার গিয়ে পৌঁছাল জাপানের ওসাকায়। বাংলা সিনেমার কাছে এ এক নতুন মাইলফলক—প্রথমবার কোনো ভারতীয় বাংলা ছবি জায়গা পেল ওসাকা এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে (OAFF)।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পথে
২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া পরিচালক অভিজিত শ্রীদাসের ছবি ‘বিজয়ার পরে’ বক্স অফিসে খুব বড় জায়গা করে নিতে না পারলেও। দর্শকদের কাছে এই ছবির আন্তরিকতা ও কাহিনি-ভঙ্গিকে আলাদা করে ধরা দিয়েছিল। সেই স্বীকৃতিই একসময় পৌঁছে দিল আন্তর্জাতিক দরজাতেও। প্রযোজক সুজিত রাহার সঙ্গে উৎসবে উপস্থিত থেকে অভিজিত জানালেন—এই সম্মান কেবল একটি ছবির নয়, বাংলা সিনেমার নিজস্ব আবেগ ও সাংস্কৃতিক সত্তারও আন্তর্জাতিক অভিষ্কার।
মঞ্চের আবেগঘেরা মুহূর্ত
বিশেষ সূত্রে খবর এই বিষয়ে অভিনেত্রী মমতা শঙ্করকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি জানান— “ছবিটা বিদেশি দর্শকের কাছে পৌঁছনো মানেই বাংলার সার্থকতা। আমার আনন্দ এইখানেই যে ‘বিজয়ার পরে’ আজ এতদিন পরেও বাংলার নাম উজ্জ্বল করছে বিদেশের মঞ্চে।”
অন্যদিকে, স্বস্তিকা মুখার্জি তাঁর চরিত্র মৃন্ময়ী প্রসঙ্গে বলেছেন—“এই চরিত্রই আমাদের প্রতিদিনকার চাপা কথাগুলো বহন করে। ছবির শক্তি তার সততায়, কোনো বাড়তি সাজসজ্জা নয়। তাই এই নির্বাচনের আনন্দ অন্যরকম।” দীপঙ্কর দে-র মতো অভিজ্ঞ অভিনেতার উপস্থিতি ছবিকে দিয়েছে প্রজন্মের সেতুবন্ধনও।
পরিচালকের স্বপ্নপূরণ
পরিচালক অভিজিত শ্রীদাস জানালেন—‘বিজয়ার পরে’ আসলে জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া এক নীরবতার আখ্যান। যা জাপান থেকে ইউরোপ—সবখানেই মানুষকে ছুঁতে পারে।
ইতি টানার আগে
২১ বছরের উৎসব ইতিহাসে এবারই প্রথম একটি বাংলা ছবি জায়গা পেল ওসাকার পর্দায়। তাই রাজপথের প্রতিযোগিতা কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা যাই হোক না কেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বলে দিল—শিল্পের আসল মর্যাদা সময়ের কাছেই নির্ধারিত হয়। ‘বিজয়ার পরে’ সেই মর্যাদারই সাক্ষী হয়ে রইল।