কয়েকদিনের টানা শুষ্ক গরম ও প্রখর রোদ শেষে রাজ্যের আবহাওয়ায় (Weather) বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ—একাধিক জেলায় আগামী দু-তিন দিন উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হওয়ার পূর্বাভাস জারি হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই, টানা বৃষ্টিপাতে পরিবহণে ব্যাঘাত, জল জমে যাওয়া কিংবা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মতো সমস্যার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
সোমবার সন্ধ্যা থেকেই দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া অস্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। আলিপুর হাওয়া অফিসের মতে, কলকাতা, দুই মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, এবং ঝাড়গ্রামে বজ্রবিদ্যুত্-সহ ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সঙ্গে ঘণ্টায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়াও বইতে পারে। বিশেষত মেদিনীপুরে বৃষ্টির দাপট অন্যান্য জেলার থেকে কিছুটা বেশি থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গেও একই সময়ে সক্রিয় হয়েছে মৌসুমি বায়ু। ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ারে প্রবল বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারসহ পাহাড়ি এবং সমতল মিলিয়ে একাধিক জেলায় আগামী দু’দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পাহাড়ি অঞ্চলে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক ও স্থায়ীবাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছে দপ্তর।
কাল থেকে বৃষ্টির তীব্রতা বৃদ্ধি
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, কাল থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের দীর্ঘ তালিকাভুক্ত প্রায় সব জেলাই কাল থেকে টানা বৃষ্টির সম্মুখীন হতে পারে—কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগণা, দুই মেদিনীপুর থেকে শুরু করে পুরুলিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং বাঁকুড়া পর্যন্ত।
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের বিশেষ করে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। সঙ্গে পাহাড়ি জেলা দার্জিলিং ও কালিম্পংয়েও বজ্রবিদ্যুত্-সহ ভারী বর্ষণের আশঙ্কা প্রবল আছে। সব মিলিয়ে অন্তত আগামী ৪৮ ঘণ্টা সাধারণ মানুষকে সাবধান থেকে চলার পরামর্শ দিচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর।
প্রশাসনের সতর্কবার্তা
ক্রমবর্ধমান বৃষ্টিপাতের ফলে জল জমে নগরাঞ্চলে সমস্যার আশঙ্কা রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকি অস্বীকার করা যাচ্ছে না। সেই কারণে জেলা প্রশাসন স্থায়ীবাসিন্দা এবং পর্যটকদের জন্য ইতিমধ্যেই একাধিক সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সর্বশেষে প্রশ্ন উঠছে—এই প্রবল বর্ষণের নতুন অধ্যায় মানুষকে কেবল গরম থেকে মুক্তি দেবে, নাকি ফের দুর্ভোগে ফেলবে গোটা বাংলাকে সেটাই এখন দেখার ?