পচিমবঙ্গে (West Bengal) বর্ষার মরশুমে ফের বাড়ছে আবহাওয়ার চরম অস্থিরতা। টানা অনেকদিন ধরে আকাশ কালো করা মেঘ আর ঝিরঝির থেকে প্রবল বৃষ্টি মিলিয়ে রাজ্যের দক্ষিণ ও উত্তর — দুই অংশই এখন অস্বস্তিকর পরিবেশ চলছে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী এখনই বৃষ্টি থামার কোনো লক্ষণ নেই। সাথে আরও জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় প্রবল বৃষ্টি, বজ্রবিদ্যুৎ এবং ঝোড়ো হাওয়ার বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর ফলে শহর-গ্রাম সর্বত্র জনজীবন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা, হাওড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাসহ—এই ছয় জেলায় বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আজ সারাদিন বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দমকা হাওয়ার বেগও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেশি হতে পারে—ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার। ফলে বাতিল বা বিলম্বিত হতে পারে যানবাহন চলাচল, ভোগান্তিতে পড়তে পারেন সাধারণ নাগরিকরা।
এছাড়া বঙ্গোপসাগরের উপর নতুন নিম্নচাপের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, যা আগামী তিন দিনে আবহাওয়ার আরও অবনতি ঘটাতে পারে। এর প্রভাব পড়বে সমুদ্রেও। তাই মৎস্যজীবীদের ২৬ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত সমুদ্রযাত্রায় সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের আশঙ্কা, এই সময় সামুদ্রিক পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তাল থাকবে। ফলে জীবিকার জন্য যারা প্রতিদিন সমুদ্রে যান, তাদের উপর আর্থিক চাপও বাড়তে চলেছে।
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতিতেও তেমন কোনো উন্নতি নেই। উত্তরের কয়েকটি জেলা যেমন জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুরে ও আলিপুরদুয়ারেও অঝোর বৃষ্টির পূর্বাভাস মিলেছে। অধিকাংশ এলাকায় বজ্রপাতের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। এই জেলাগুলির মানুষদের নদী ও পাহাড়ি অঞ্চল সংলগ্ন এলাকায় বিশেষভাবে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে আরও চিন্তার খবর হল, আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার থেকে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় আরও বেশি বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা রয়েছে। কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে বৃষ্টির মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি হতে পারে। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেরও একাধিক জেলা যেমন হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এমনকি কলকাতায়ও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা।
আবহাওয়া দপ্তর ও প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়েছে, পরিস্থিতি আপাতত দুর্যোগপূর্ণই থাকবে। তাই সাধারণ মানুষকে সতর্ক থেকে চলার পরামর্শ দিয়েছে। খোলা জায়গায় আশ্রয় না নেওয়া, অপ্রয়োজনে বাইরে না বেরোনো এবং সরকারি পরামর্শ মেনে চলাই এখন সুরক্ষার একমাত্র উপায়।