টলিউডে (Tollywood) বড় ইভেন্ট মানেই দর্শকের কৌতূহলের শেষ নেই। তবে এইবার উৎসাহ বাড়ানোর আসল কারণ ছিল দুটি পরিচিত মুখের পুনর্মিলন—দেব আর শুভশ্রী। একসময় তাঁদের জুটিকে কেন্দ্র করে পর্দা যেমন কাঁপতো, তেমনই ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়েও চলত নানা ফিসফাস। বহু বছর পর যখন খবর এল পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরে আবার একসঙ্গে ফিরছেন তাঁরা, তখনই ভক্তদের মাঝে তৈরি হয় বিদ্যুতের মতো উত্তেজনা।
ট্রেলারের দিন তাদের সেই চেনা ছন্দে জনপ্রিয় গানে নাচ—দর্শকদের যেন ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সেই ‘গোল্ডেন পিরিয়ডে’। সেদিন সোশ্যাল মিডিয়া ভরে উঠে ছিল স্মৃতিকাতর পোস্টে। তবে প্রশ্নও উঠছিল—পর্দায় কি আবারও পাওয়া যাবে আগের মতোই রসায়নের ঝলক?
সেই প্রশ্নের জবাব পেতেই ১৪ই অগস্ট প্রেক্ষাগৃহে ঢুকে ছিলেন বহু মানুষ। কিন্তু মুক্তির পর যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হলো, তাতে অনেককেই চমকে দিয়েছে। প্রথম দিন থেকেই দর্শকের ঢল থাকলেও, হল থেকে বেরিয়ে আসা মানুষের মুখে দেখা গেল হতাশার ছাপ। জানা গেল ছবির কাহিনি অত্যন্ত চেনা ছক, কোথাও নতুনত্বের কোনো বালাই নেই। ক্লাইম্যাক্স অনুমেয়, আর গল্পের গতিও একঘেয়ে। তারকাদের পুনর্মিলনের কৌতূহল কিছুক্ষণের জন্য আনন্দ দিলেও, সেটি ছবির দুর্বলতাকে ঢাকতে পারেনি।
অভিনয়কে কেন্দ্র করেও সমালোচনার ঝড় বইছে। দর্শকরা মানছেন—দেব-শুভশ্রীর একসঙ্গে উপস্থিতি নিঃসন্দেহে আবেগঘন। অনেকেই বলছেন, পর্দায় তাদের মধ্যে সেই রসকে আর খুঁজে পাওয়া গেল না। আশ্চর্যের বিষয়, বরং কয়েকজন সাপোর্টিং কাস্টকেই বেশি প্রশংসা করছেন অনেকে। আর সেই কারণেই সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেষ্ট সমালোচনা ভেসে আসছে—কারও মতে, এটি মূলত আবেগকে ‘মার্কেটিং টুল’ হিসেবে ব্যবহার করে বানানো প্রকল্প।
অন্যদিকে অনেকেই এর সঙ্গে তুলনায় টেনে এনেছে জিৎ অভিনীত ‘অসুর-‘এর কথা। যেখানে কাহিনি এবং অভিনয়ের দিক থেকে সেই ছবি প্রশংসিত হয়েছিল কিন্তু বক্স অফিসে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। সেখানে ধূমকেতু সম্পূর্ণ উলটো—আবেগে ঝলমল প্রচার থাকলেও ভিতরে শক্তপোক্ত কিছু নেই বলে দাবি করছেন অনেকেই। ভালো গল্প বলার সাহস হারিয়ে ফেলছে?
সবশেষে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে—বাংলা সিনেমার দর্শককে কি সত্যিই শুধুই নস্টালজিয়া আর স্টার-পাওয়ার দিয়ে টানা সম্ভব? কিন্তু আবেগ কি যথেষ্ট? সিনেমা টিকে থাকে গল্প আর অভিনয়ের ভিত্তিতে।‘ধূমকেতু’ নিশ্চিতভাবেই দেব-শুভশ্রীর ভক্তদের কাছে এক আবেগের মুহূর্ত। ধূমকেতু হয়তো সাড়া জাগিয়েছে প্রথম ঝলকেই, কিন্তু স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারল কি না, তা নিয়েই এখন উত্তপ্ত আলোচনা।