সত্যি বলতে কী, ছুটি (Holiday) শুনলেই মনটা আনন্দে নেচে ওঠে। তবে হাতে মাত্র দু’-দিনের ছুটি নিয়ে কোথায় যাবেন কি বা করে ভেবে অনেকেই গুলিয়ে যান। কিন্তু চিন্তার কোনো কারণ নেই! কলকাতার কাছাকাছি আছে এমন কিছু দারুণ গন্তব্য, যেখানে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার মন ভরে যেতে বাধ্য। আছে প্রকৃতির শান্তি আর আধুনিক রিসর্টের সুবিধা আর তার সাথে এক্সট্রা পাওনা রাজকীয় ঐতিহ্য। চলুন তবে দেখে নেওয়া যাক—
রাজবাড়ি বাওয়ালি
কে বলে রাজকীয় আমেজ পেতে আপনাকে জয়পুর বা উদয়পুর ছুটতে হবে? কলকাতা থেকে ঘণ্টাখানেক গাড়ি চালালেই পৌঁছে যাবেন প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো রাজবাড়ি বাওয়ালি-তে। পুরনো দিনের সুবিশাল দালান-কোঠা, রাজসিক ঘরবাড়ি, বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট, আউটডোর সুইমিং পুল—সব মিলিয়ে এটা নিখুঁত উইকএন্ড রিসর্ট।
বিয়ে-বাংলো থেকে শুরু করে জমকালো ফ্যামিলি পার্টি—সবকিছুরই ভেন্যু হয় এখানে। আর খাওয়ার মধ্যে আছে দেশি থেকে পর্তুগিজ ও বাংলাদেশি পদ, সঙ্গে আপনার আলাদাই আমেজ তৈরী করবে পিয়ানোর ঘর, যা আপনাকে একেবারে সিনেমার দৃশ্যে নিয়ে যাবে!
বাড়ি কোঠী (আজিমগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ)
যাঁরা একটু দূরে গিয়ে ইতিহাস ছুঁতে চান, তাঁদের জন্য একেবারে পারফেক্ট—বাড়ি কোঠী। ১৭৭৪ সালে তৈরি এই হেরিটেজ ম্যানশন আজকে রূপান্তরিত হয়েছে হোটেলে। গ্রামীণ প্রকৃতির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা এই বিশাল রাজবাড়ির আছে শিসমহল, দরবার হল, জলসাঘর—শুধু নাম শুনলেই ইতিহাসের গন্ধ পাওয়া যায়।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এখানে কাজ করেন আশেপাশের গ্রামের মানুষজন—গাইড হোক বা রাঁধুনি, সবেতেই স্থানীয় ছোঁয়া আছে। ফলে ইতিহাসের সঙ্গে সঙ্গে মিলবে ভরা আতিথেয়তা।
ইটাচুনা রাজবাড়ি (হুগলি)
রাজকীয় আভিজাত্য যদি ভাসাতে চান, তাহলে ইটাচুনা রাজবাড়ি আপনার জন্যই। হুগলির খানাকুলে অবস্থিত এই বাড়ি কলকাতা থেকে মাত্র ৭০ কিমি দূরে।
বাড়ির তিন ভাগ—দেব মহল, অন্দরমহল আর বহিরমহল—দেখলেই বোঝা যায় একসময় কী ভব্যতার ছিল। চারপাশে সবুজ বাগান, টালিপাড়া পুকুর আর ভেতরে বিশাল ঘরবাড়ি, লম্বা বারান্দা, কুণ্ডু পরিবারে পূর্বপুরুষদের ছবি—চারিদিকেই যেন ইতিহাসের আবহ।
তাহলে প্ল্যান কী?
হাতে মাত্র দু’-দিন হলেও কলকাতার কাছেই অসংখ্য এমন ঠিকানা আছে, যেখানে গল্প হোক, আড্ডা হোক, বা শুধু রিল্যাক্সেশন—সব একসঙ্গে মিলবে। এখন শুধু ব্যাগটা গুছিয়ে নিন, বাকি দিনগুলো নিজের জন্য বাঁচুন।