ভেবে দেখুন, আপনি দামি গাড়ি চালাচ্ছেন কিংবা আয়করের টাকা দিচ্ছেন অথচ আবার রেশনের (Ration) লাইনে গিয়ে বিনামূল্যে চাল-ডাল তুলছেন! শুনে অবাক লাগছে তো? কিন্তু বহু বছর ধরে এটাই চলে আসছে। দেশজুড়ে বিনামূল্যে রেশনের তালিকায় বড়সড় ঝড় বয়ে গেছে। এবার আর সবার জন্য ফ্রি চাল-ডাল নয়! কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—১.১৭ কোটি কার্ডধারীর নাম রেশন তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে।
কেন বাদ পড়ছে এত নাম?
সরকারের যুক্তি স্পষ্ট – যাঁদের আর্থিক অবস্থা ভালো, তাঁদের সরকারি “ফ্রি খাদ্যসাহায্য” পাওয়ার কোনো অধিকার নেই। যাচাইয়ে ধরা পড়েছে, অনেকেই দামী গাড়ি চালিয়েও আবার রেশনের লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। কেউ কেউ আবার আয়কর দেন, তবুও সুবিধা নিচ্ছেন। হিসাব বলছে কঠোর নজরদারিতে ধরা পড়েছে প্রায় ৯৫ লক্ষ রেশন কার্ডধারী আসলে আয়কর দেন। তাছাড়া ১৭ লক্ষেরও বেশি পরিবারের নিজস্ব চার চাকার আছে। আর প্রায় ৫ লক্ষ উচ্চ বেতনের কর্পোরেট কর্মীও আনন্দে ফ্রি শস্য নিচ্ছিলেন। তাই এঁদের আর গরিবদের জন্য নির্ধারিত খাদ্যসুবিধা দেওয়া হবে না।
তথ্য যাচাইয়ের নতুন প্রক্রিয়া
আগে শুধু স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজখবর নিয়ে রেশনকার্ড তৈরি করা হতো। এবার সরকার প্রতিটি কার্ডের তথ্য অন্যান্য দপ্তরের ডাটার সঙ্গে মিলিয়েছে। আয়কর দপ্তর, পরিবহন মন্ত্রক, এমনকি কর্পোরেট তথ্য থেকেও মিলিয়ে দেখা হয়েছে। ডিজিটাল ক্রস-চেকেই ধরা পড়েছে—যাঁরা আসলেই আর্থিক স্বচ্ছল, তাঁরাই এতদিন ফ্রি রেশন তুলছিলেন।
রাজ্যগুলির জন্য কড়া ডেডলাইন
সব রাজ্যকে ইতিমধ্যেই নোটিশ গেছে—৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই অযোগ্যদের নাম মুছে ফেলুন। কেন্দ্র বলেছে, আর দেরি নয় করা যাবে না। যাদের প্রাপ্য, তাদের থালায় সঠিক সময়েই আনাজ পৌঁছাতে হবে। কেন্দ্রীয় খাদ্য সচিবও জানিয়েছেন, ডুপ্লিকেট ও মৃত কার্ডগুলো আগেই সরানো হয়েছে, এবার যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করার চূড়ান্ত কাজ চলছে।
গরিবদের স্বস্তি
যাঁরা এতদিন অভাবে ছিলেন, তাঁরা বলছেন—“ভালো হলো, এবার অন্তত সত্যিকারের প্রয়োজনীয় মানুষ রেশন পাবেন।” বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের সুবিধা আরও স্বচ্ছভাবে পৌঁছবে দরিদ্র পরিবারগুলির কাছে। প্রশাসনের দাবি, এই উদ্যোগের ফলে ন্যাশনাল ফুড সিকিউরিটি অ্যাক্ট আরও কার্যকরভাবে প্রয়োগ হবে।