কেরলে (Kerala) আসন্ন স্থানীয় প্রশাসনিক ভোটকে ঘিরে হঠাৎ করে ভোটার তালিকায় নাম তোলার আগ্রহ নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি তালিকার প্রস্তুতির জন্য নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই প্রায় ৩০ লক্ষের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। আর এর মধ্যে মৃত ভোটারের নাম বাদ দেওয়া বা ঠিকানা বদলের মতো আবেদন ধরলে সেই সংখ্যা ৩৫ লক্ষ স্পর্শ করেছে। এত বিপুল সাড়া অতীতে খুব কমই দেখা গেছে বলে মনে করছে কমিশন।
প্রশ্ন উঠছে—এর পেছনে কি কেরলে কর্মরত বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিকদের ভূমিকা রয়েছে? বিহারে যেমন বিশেষ নিবিড় সংশোধনের সময় লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছিল, তেমন ঘটনার আশঙ্কায় কি কিছু শ্রমিক এবার কেরলেই নাম তুলতে আগ্রহী হয়েছে? প্রশাসনিক মহলের একটি অংশ মনে করছে, কাজের জায়গায় রাজনৈতিক অধিকার হারানোর ভয় থেকে এই প্রবণতা দেখা দিচ্ছে।
কেরলে ভোটার তালিকায় নাম তোলার প্রক্রিয়া খুব বেশি জটিল নয়। সেখাকার লোকাল যেকোনো ব্যাঙ্কের পাসবই অথবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির শংসাপত্র থাকলেই আবেদন গ্রহণ করা হয়। ফলে নথি জোগাড় করা তেমন কোনো দুঃসাধ্য কাজ নয়। তবে এই তালিকা কেবলমাত্র স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পুরসভা নির্বাচনের কাজে ব্যবহার হবে। জাতীয় নির্বাচনের জন্য পৃথক তালিকা আগেই প্রস্তুত করেছে ভারত নির্বাচন কমিশন।
শ্রমমন্ত্রী ভি শিবনকুট্টি স্বীকার করেছেন যে বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বিহার ও ওড়িশা থেকে লাখ লাখ শ্রমিক কেরলে কাজ করতে আসেন, তবে খুব সামান্য অংশই এতদিন এখানে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন। এ বারে হঠাৎ এত বিপুল আবেদন কেন—সেটাই বড় প্রশ্ন।
বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বও মনে করছে, আবেদন বৃদ্ধির ঘটনা একেবারেই অস্বাভাবিক এবং এই ভোটার তালিকাই পরবর্তীতে রাজনৈতিক সমীকরণই বদলে দিতে পারে। ফলে ৩০ আগস্ট তালিকা প্রকাশিত হলে সেখানেই বোঝা যাবে সত্যিই কি পরিযায়ী শ্রমিকদের ঢল নেমেছে, নাকি অন্য কোনো কারণ এর নেপথ্যে। আপাতত জল্পনা তুঙ্গে, আর রাজ্য রাজনীতির সব নজর সেই তালিকার দিকেই।