বিগত গত কয়েকদিন ধরে গুমোট গরমে হাঁসফাঁস করছিল রাজ্য (State), কিন্তু সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে বাইরে তাকাতেই আকাশের গর্জনে, বজ্রবিদ্যুৎ আর ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাসে চমকে উঠল গোটা দক্ষিণ থেকে উত্তরবঙ্গ। টানা গরমের পর আবহাওয়ার হঠাৎ রূপ বদল দেখে অনেকেই ভাবছেন, তবে কি আবার নতুন করে এল নিম্নচাপ? সম্পূর্ণ জানতে গেলে খবরটি পড়তে হবে।
আলিপুর হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, অন্ধ্রের উত্তর ও ওড়িশার দক্ষিণের মাঝামাঝি, পশ্চিম-মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর মিলিয়ে বঙ্গোপসাগরে একটি নতুন নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই নিম্নচাপের সরাসরি প্রভাব রাজ্যে না পড়লেও, আকাশ মেঘাছন্ন হয়ে রয়েছে। বর্তমানে বাংলার উপর কোনো মৌসুমি অক্ষরেখা না থাকলেও, বৃষ্টির হাত থেকে সহজেই ছাড়া পাচ্ছে না রাজ্য।
দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ জেলায় আজ থেকে যেমন বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়-বৃষ্টি চলবে, তেমনই তীব্র দমকা হাওয়ার সতর্ক বার্তাও জারি রয়েছে। বিশেষ করে সোমবার দিনটিতে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা অঞ্চলে বজ্রপাতের সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি ঢালবে। কলকাতা ও হাওড়া শহরবাসীকেও সতর্ক থাকতে বলেছে দফতর, কারণ বিকেল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হতে পারে দমকা হাওয়ার সঙ্গে ঝড়বৃষ্টি, যার গতি সময়ে সময়ে ঘন্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পেরোতে পারে।
উত্তরবঙ্গেও শান্তি নেই। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের অবস্থাও খুব একটা ভালো না। সেখানেও মৌসম ভবন থেকে হলুদ সতর্কতাসহ বজ্রপাত ও মাঝারি বৃষ্টির উল্লেখ করা হয়েছে সব জেলাগুলিতে।
তবে এখানেই শেষ নয়, আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবারের পরিস্থিতিতেও তেমন কিছুটা রূপ বদল দেখা যাচ্ছে না। কারণ দক্ষিণবঙ্গের বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, দুই মেদিনীপুর ও দুই বর্ধমান, দুই ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা ও নদীয়াসহ প্রতিটি জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টিপাতের ইঙ্গিত রয়েছে। অন্যদিকে মঙ্গলবার বিশেষত জলপাইগুড়িতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে এবং বাকি জেলা যেমন দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে বজ্রবিদ্যুৎ ও ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা অপরিবর্তিত থাকছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, রাজ্যবাসীকে আপাতত বৃষ্টির দাপটে, বজ্রবিদ্যুতের আশঙ্কায় ও জোরালো দমকা হাওয়ায় বিশেষ সতর্ক থাকতে বলেছে প্রশাসন। এখন প্রত্যেকের উচিত এ ক’দিন আবহাওয়ার খবর শুনে বাইরে বেরোনো। কারণ, নতুন করে সাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ যতদিন না দুর্বল হয়, ততদিন পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টির খেলা চলতেই থাকবে বাংলার আকাশে।