দেশের প্রতিরক্ষা মঞ্চে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। সম্প্রতি স্বাধীনতা দিবসে (Independence Day) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেওয়া বাণী যেন ভারতকে প্রেরণা জুগিয়েছে—দেশে তৈরি হবে উচ্চমানের জেট ইঞ্জিন। বিদেশের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে এবার ভারত স্বনির্ভর হবার পরিকল্পনা নিয়েছে । তবে এই পরিকল্পনা এখন কেবল স্বপ্ন নয়, বাস্তবায়নের পথেও পদক্ষেপ নিতে চলেছে। আর সেই পথের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে চলেছে জাপানের সঙ্গেও যৌথ উদ্যোগে কাজ করার সম্ভাবনা।
ভারতের প্রথম থেকেই যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরির জন্য মূলত ব্রিটিশ ও ফরাসি প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল ছিল। তবে জাপানের মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রতিষ্ঠানটি একসময় বিশ্বযুদ্ধের সময় বহু যুদ্ধবিমান নির্মাণ করেছিল, তারা এবার ভারতীয় গবেষকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন প্রযুক্তির সূচনা করতে মুখিয়ে রয়েছে। যদিও সরকার থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক অনুমোদন মেলেনি, তবু সেই সম্ভাবনাই আলোড়ন তৈরি করেছে সশস্ত্র বাহিনীর গবেষণা দফতরে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সমঝোতা ভারতের জন্য অন্যতম পদক্ষেপ হবে। শুধু যুদ্ধবিমান ইঞ্জিনে নির্ভরশীলতা কমবে না, ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জাপানের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবে। আর এটা মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্বপ্নের সঙ্গেও জুড়ে যাবে শক্তিশালী হাতিয়ার করে।
১৯৫১-র দশকের পর থেকে জাপানে সামরিক প্রযুক্তি উন্নয়ন অনেকটাই থমকে গিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তির কারণে জাপান আবারও নিজস্ব আধুনিক যন্ত্রাংশ নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেইসঙ্গে ভারতও চাইছে বায়ু সেনার শক্তি বাড়াতে, পুরনো মিগ-২১ বিমানের পরিবর্তে দেশীয় ‘তেজস’ ও সামনের প্রজন্মের ‘অ্যামকা’ ইঞ্জিনযুক্ত যুদ্ধবিমান চালু করতে চাইছে। কিন্তু ইঞ্জিন সংকটের কারণে এই পরিকল্পনা দেরিতে এগোচ্ছে। বিদেশ থেকে ইঞ্জিন আসছে না বা সময়মত সরবরাহ হচ্ছে না, আর সেই জন্যই ভারত নিজে থেকে তৈরির চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।
এই মুহূর্তে ভারতের জন্য জাপানের সঙ্গের এই প্রস্তাব মানে শুধু এক প্রযুক্তিগত সঙ্গতি নয়, এটা পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি শক্তিশালী কৌশলগত জোট গড়ার দিকেও বড় পদক্ষেপ হতে পারে। এছাড়া নিজের অস্ত্র প্রযুক্তি বিকশিত করার দিকেও এটি বড় অগ্রগতি।