আজ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে রেড রোডে (Red Road) গোটা শহর যেন একত্র হয়েছিল জাতীয় পতাকার নিচে। বহু স্কুলের ছাত্রছাত্রিকেই দেখা গেল এই উৎসাহ-উদ্দীপনায় অংশ নিতে। কিন্তু এই উদযাপনের মাঝে আচমকা ঘটে গেল এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা, যা উপস্থিত সব দর্শককেই চিন্তায় ফেলেছিল। জাতীয় পতাকা হাতে কুচকাওয়াজের সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা পড়ুয়াদের কয়েকজন হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে, শুরু হয়ে যায় কয়েক মুহূর্তের উদ্বেগ।
ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে আরও পড়ুয়া—তাদের মধ্যে কারোর মাথা ঘুরছে আবার কেউ কেউ অসহ্য গরম ও ক্লান্তিতে শ্বাস নিতে পারছে না। তবে প্রশাসন সময় নষ্ট না করে দ্রুত তাদের সকলকে বিপর্যয় মোকাবিলা অ্যাম্বুলেন্সে করে এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। জানা গিয়েছে, মোট ৩৫ থেকে ৫৩ জন পড়ুয়াকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে খুব গুরুতর অসুস্থ একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়; বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল হয়ে এলে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হয়।
এই খবর পেয়েই হাসপাতালে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, সকালের খাবার খাওয়া হয়নি অনেকেই, তার থেকে ডিহাইড্রেশন এবং টেনশনে শরীর খারাপ হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন, পড়ুয়াদের সাহস জোগাতে নিজেই মিষ্টি খাইয়ে দেন এবং তাদের মাথায় হাত রেখে দ্রুত সুস্থতার কামনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী পড়ুয়াদের পরিবারের সদস্যদের খবর দিয়ে আশ্বস্ত করার ব্যবস্থাও করেন।
অবশ্য চিকিৎসকরা জানান, আজ সকালটা অত্যন্ত গরম থাকায় এবং স্বাধীনতা দিবসের প্রস্তুতি, মহড়া ও কুচকাওয়াজের টানটান উত্তেজনায় অনেকেই ঠিকমতো জল বা খাবার গ্রহণ করেনি। ফলে হিট এক্সহস্টন বা ডিহাইড্রেশন-এর কারণে সমস্যা দেখা দেয়।
এই ঘটনার পরে রেড রোডে নিরাপত্তা ও প্রস্তুতির দিক আরও জোরালো করার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে, মুখ্যমন্ত্রী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মানবিক তৎপরতা এবং দ্রুত পদক্ষেপ গোটা শহরবাসীকে আশ্বস্ত করেছে, এবং পড়ুয়াদের পরিবারের চিন্তা দূর করেছে। স্বাধীনতা দিবসের এই ঘটনার মাঝেও, যত্ন ও ভালোবাসা—ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর নজির রাখল কলকাতা।এই বছর উৎসবের মাঝে যেমন এসেছিল ক্ষণিক বিপর্যয়, তেমনি উদয় হয়েছিল তৎপরতা, ভালোবাসা আর দায়বদ্ধতা—যা পরিবার, সমাজ, ও শিক্ষাক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করে তুলল।