দমদমের প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে শুক্রবার জমায়েত হলেন হাজারো কর্মী–সমর্থক। কারণ আজ মেট্রোর রুট উদ্বোধনে এসেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister)। মঞ্চে উঠেই বাংলা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের সূচনা করলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বক্তব্যে মূল প্রাধান্য পেল দুর্নীতি, অনুপ্রবেশ এবং বাংলার উন্নয়ন। তিনি আজ বাংলার জন্য ৫২০০ কোটি টাকার ছয় লেনের এলিভেটেড কোনা এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের শিলান্যাস করেন।
তৃণমূলকে একহাত
প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী সরাসরি আক্রমণ করলেন তৃণমূল সরকারকে। শিক্ষক নিয়োগ মামলায় প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা রেশন দুর্নীতির মামলায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেন, “জনপ্রতিনিধিরা জেলে থেকেও পদ আঁকড়ে রয়েছেন, মানুষের প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করেছেন। তিনি আরও বলেন দুর্নীতি করলে প্রধানমন্ত্রীও ছাড় পাবেন না।” তাঁর অভিযোগ, দুর্নীতি বিরোধী বিলের বিরোধিতা করছে তৃণমূল, যা জনগণের সঙ্গে প্রতারণার সমান।
অনুপ্রবেশকারীদের ইস্যুতে আক্রমণ
এদিনের সভায় সবচেয়ে তীব্র সুর শোনা গেল অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে। মোদীর দাবি, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা বাংলার যুবকদের কাজ কেড়ে নিচ্ছে, জমি দখল করছে এবং সামাজিক সঙ্কট তৈরি করছে। তিনি ঘোষণা করেন, “একবার বিজেপিকে সুযোগ দিন, অনুপ্রবেশকারীরা পালাতে বাধ্য হবে।” কেন্দ্র ইতিমধ্যেই ‘ডেমোগ্রাফিক মিশন’-এর মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও ইঙ্গিত দেন মোদী।
উন্নয়নের ডাক
বাংলা ভাষা নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান, “বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে বিজেপি সরকার। সংস্কৃতি রক্ষা এবং উন্নয়নের জন্য আমাদের একটি রোডম্যাপ রয়েছে।” তৃণমূলের কাছে কোনো রোডম্যাপ নেই। স্মার্ট সিটি প্রকল্প থেকে শুরু করে পরিকাঠামো—কেন্দ্রের সমস্ত প্রকল্পগুলিকে তৃণমূল ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সভামঞ্চের প্রাণবন্ত মুহূর্ত
সভায় উপস্থিত থাকেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। সীমান্ত সুরক্ষা এবং অনুপ্রবেশ রোধে মোদীর কাছে সরাসরি আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে কলকাতা মেট্রোর সম্প্রসারণে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন। আরও উপস্থিত ছিলেন শমীক ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে রুদ্রনীল ঘোষও।
শেষে মোদীর বার্তা ছিল স্পষ্ট—“তৃণমূল মানেই ক্রাইম আর কোরাপশন। বাংলার আসল পরিবর্তন কেবল বিজেপিই আনতে পারে। স্লোগানটা মনে রাখবেন—‘বাঁচতে চাই, তাই বিজেপি চাই।’”বাংলার ভোটের আগে এই সভা কার্যত নতুন বারুদ ছড়াল রাজনৈতিক ময়দানে। অনুপ্রবেশ ও দুর্নীতির প্রশ্নে বিজেপি কতটা জনসমর্থন আদায় করতে পারে, এখন নজর সেই দিকেই।