লোকসভায় আজ উপস্থাপিত হতে চলেছে ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল (Amendment Bill), আর সেটিকে ঘিরেই শুরু হয়েছে প্রবল রাজনৈতিক উত্তেজনা। কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রস্তাব অনুযায়ী, যদি প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা কোনো মন্ত্রী গুরুতর অপরাধে গ্রেফতার হন এবং টানা ৩০ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকেন, তাহলে তাকে তাঁর পদ থেকে অপসারণের ব্যবস্থা করা হবে। একইসঙ্গে, যদি পাঁচ বছরের বেশি সাজা হয়, তাহলেও মন্ত্রিত্ব খোয়া যাবে।
এই নতুন পদক্ষেপকে ঘিরে বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ, আসল উদ্দেশ্য হল নির্বাচিত রাজ্য সরকারকে অস্থিতিশীল করে দেওয়া। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি আক্রমণ করেছেন কেন্দ্রকে। তাঁর বক্তব্য, “ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দেশের সীমান্ত নিয়ে কোনো স্পষ্ট উদ্যোগ না দেখিয়ে বিরোধী দমনই এদের একমাত্র লক্ষ্য। এই বিল আসলে গণতন্ত্রবিরোধী” এর পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, কেন্দ্র রাজ্যের সরকারকে ফেলার জন্য “প্রতিটি ফাঁকফোকর” কাজে লাগাচ্ছে।
অভিষেক আরও প্রশ্ন তোলেন, যে সরকার বারবার পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে বড় বড় বক্তব্য রাখে, তারা কেন বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ করছে না? তিনি আরও বলেন— কৃষক, শ্রমিক, তফসিলি জাতি, ওবিসি, উপজাতি— কারও স্বার্থেই এই সরকার কাজ করছে না, বরং সংবিধানকেই বিপন্ন করছে।
অন্যদিকে এই বিল নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও চরমে উঠেছে। তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তীর মতে, একদিকে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবহার করে বিরোধীদের ভয় দেখানো হচ্ছে, অন্যদিকে এই বিল এনে নির্বাচিত রাজ্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আরও বলেন বিজেপি একদিকে ভোটে কারচুপি করে, অন্যদিকে যেখানে ফলাফল অনুকূলে যায় না, সেখানে সরকারের ভিত নাড়ানোর চেষ্টা করে। তবে অপরদিকে বিজেপির বক্তব্য— যাঁরা ভোটে কারচুপি করে ক্ষমতা দখল করেন, তাঁদের আবার গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা সাজে না।
এই বিল লোকসভায় পেশ হওয়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে যে বড় বিতর্ক ও লড়াই তৈরি হবে, তার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। এখন অপেক্ষা, সংসদে আলোচনা শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কোন পথে গড়ায়।