সম্প্রতি দেশের পথে-ঘাটে ছড়ানো অসংখ্য কুকুরদের ভবিষ্যৎ নিয়ে টানটান উত্তেজনা চলছিল কয়েকদিন ধরে। সোমবার ১১ ই আগস্টের রায়ে আদালত (Court) জানিয়েছিল, দিল্লি ও তার আশেপাশের অঞ্চল থেকে সমস্ত রাস্তার কুকুরকে সরিয়ে নিতে হবে। আর সেখান থেকেই শুরু হয় হুলস্থুল কান্ড পশুপ্রেমী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবাই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও উঠেছে নিন্দার ঝড়, বাদ যায়নি রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে মানুষ আন্দোলন। অবশেষে ২২ শে আগস্ট শীর্ষ আদালত নতুন নির্দেশ দিয়েছে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক রাস্তার কুকুরদের কি রায়ে দিল আদালত।
কেন এত বিতর্ক ?
গত কয়েক মাস ধরে দিল্লিতেই তুলনামুলকভাবে বাড়তে শুরু করেছিল কুকুর কামড়ানোর ঘটনা। ফলে হাসপাতালে ভর্তি এবং সেখান থেকেই শুরু হয় রেবিসে মৃত্যু ঘটনা। এই খবর ছড়াতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দিল্লিবাসীরা। সেই কারণেই ১১ই আগস্ট আদালত চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়ে। কিন্তু এই রায়ের ফলেই দেখা দেয় দেশ জুড়ে আন্দোলন। বিরোধীদের দাবি ছিল, শুধু সরিয়ে দিলেই সমস্যার সমাধান হয় না, বরং সমস্যা আরও বড় হয়ে যাবে। এই চাপের মধ্যেই আদালতও এবার তাই ভারসাম্য খুঁজল।
নতুন নির্দেশ কী বলছে?
আজকের রায়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে এবার থেকে আর “রাস্তা খালি করতেই হবে” এমন প্রয়োজন নেই বরং কুকুরগুলিকে প্রথমে ধরে তাদের টিকাকরণ করতে হবে। সেই সঙ্গে স্টেরিলাইজের ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হবে। তারপর যে এলাকা থেকে তাদের আনা হয়েছিল, সেখানেই ফিরিয়ে দিতে হবে। তবে ব্যতিক্রম হিসেবে থাকবে, যদি কোনো কুকুর বিপজ্জনক হয় বা জলাতঙ্কে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তখন তাকে আর ছাড়ার কোনো প্রশ্নই উঠবে না।
রাস্তায় খাওয়ানোয় কড়াকড়ি
এর সাথেই আরও একটি নতুন নির্দেশ যুক্ত হল খাবার খাওয়ানো নিয়ে। এখন থেকে খোলা রাস্তায় আর কুকুরদের খাবার দেওয়া যাবে না। এর পরিবর্তে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ফলে পথকুকুরদের প্রতি যত্ন বজায় থাকবে, আবার জনস্বাস্থ্যও সুরক্ষিত থাকবে।
দেশব্যাপী বিরোধিতার প্রেক্ষিতে আজকের সিদ্ধান্তকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, কুকুরদের সুরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা— দুইয়ের ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আদালতও বার্তা দিয়েছে, এই পদক্ষেপ জনস্বার্থেই নেওয়া হচ্ছে। এক কথায়, এবার আইনও সন্তুষ্ট, প্রাণপ্রেমীরাও খুশি।