পশ্চিমবঙ্গের বহুদিনের আলোচিত এসএসসি (SSC) নিয়োগ মামলায় নতুন মোড়। প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও কর্মীর চাকরি বাতিলের বিষয়ে যে রায় শীর্ষ আদালত আগেই দিয়েছিল, সেই রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি এবার খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ আগের রায়ই বহাল থাকছে, চাকরিকর্তা বা চাকরি হারানো কেউই আদালতের কাছে নতুন সুযোগ পেলেন না।
পুনর্বিবেচনার পথ বন্ধ
এই মামলায় রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং চাকরি হারানো একাংশ প্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, এত বড় সংখ্যায় নিয়োগ বাতিল হলে শিক্ষা ব্যবস্থার ভাঙন ঘটবে। তবে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে এই মামলায় আর নতুনভাবে শুনানির প্রয়োজন নেই। আদালতের মতে, সিবিআই তদন্ত এবং বাগ কমিটির রিপোর্ট থেকে প্রতারণা ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
পূর্বের রায় অটুট
গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের প্যানেলকে পুরোপুরি বাতিল করে দেয়। তখন প্রায় ২৫,৭৩৫ জনের চাকরি চলে যায়। আদালত জানায়, যথাযথ তথ্য না থাকায় কারা যোগ্য আর কারা অযোগ্য তা আলাদা করা সম্ভব হয়নি। তাই গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াকেই অবৈধ ঘোষণা করা হল। একইসঙ্গে, অযোগ্য প্রার্থীদের পাওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রে প্রভাব
এই রায়ের ফলে একাধিক স্কুলে শিক্ষক সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। বিশেষত নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল প্রবল। সেই কারণেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আদালতের কাছে বিশেষ আবেদন জানিয়েছিল। আদালত জানিয়েছিল, ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব শিক্ষক সরাসরি দুর্নীতিতে জড়িত নন, তাঁরা স্কুলে পড়াতে পারবেন। তবে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতেই হবে।
পুনর্বিবেচনার শেষ চেষ্টা বন্ধ
রাজ্য ইতিমধ্যেই নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ফলে আগামী দিনে সম্পূর্ণ নতুনভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য আইনি লড়াইয়ের রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে গেল। ফলে কার্যত রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে নতুন অধ্যায়ের সূচনা অনিবার্য হয়ে উঠল, এবং চাকরি হারানো হাজার হাজার প্রার্থীকে এখন নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে।