পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore) মোহনপুরে চাকরি হারানো এক শিক্ষকের দেহ নিয়ে আন্দোলনকারীদের এবং পুলিশের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত সৃষ্টি হয়ে। মৃত শিক্ষক সুবল সোরেনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যে প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়, সেখানে তার দেহকে নিয়ে পুলিশের কিছু আচরণে ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভে মুখরিত হন। ঘটনাটি শুধুই একটি চাকরিহারা শিক্ষক আন্দোলনের নয়, বরং মানুষের আবেগ এবং ক্ষোভের মিশ্রণ হয়ে উঠেছে।
সূত্র মারফত জানা গেছে, হাসপাতাল থেকে রুবি মোড় পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ মিছিল হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু অভিযোগ সেই সময়ে পুলিশ সুবলের দেহটি অন্য একটি গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এর প্রতিবাদেই শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা মাথায় কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। তারা আরও জানান, “পরিবারকে অবগত না করে দেহ অপহরণের এমন ঘটনা আমরা মেনে নিতে পারি না।” ফলে আন্দোলনরত যোগ্য শিক্ষকরাই শেষ পর্যন্ত সুবলের দেহটি আগলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, যাতে এটি সঠিকভাবে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।
তবে পুলিশের দাবি, তারা মিছিলের অনুমতি দিয়েছিল কিন্তু কোনোরকমের রাস্তা আটকে অবরোধের অনুমতি দেননি, তাই এক পাশে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অন্যদিকে সুবল সোরেনের পরিবারের অভিযোগ, চাকরি হারানোর পর থেকেই সুবল মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন এবং চিকিৎসকেরাও জানান, অনিয়মিত ওষুধ সেবনের ফলে মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছিল, যার ফলে তার মৃত্যু ঘটেছে। এই ঘটনার পরেই শিক্ষক সমাজের মধ্যে বড় ধরণের ক্ষোভ এবং বিচলনা সৃষ্টি হয়েছে।
চাকরিহারা শিক্ষকরা অভিযোগ তুলছেন, এই রূপ মানসিক চাপের মধ্যে থেকে শিক্ষকেরা কখনই শান্তিপূর্ণ ভাবে পরীক্ষাও দিতে পারবে না। তারা আরও জানান, “এখানে দেহ নিয়ে রাজনৈতিক ঝামেলা করতে চাই না, তবে শেষ বারের মতো নিজেদের দাবি তুলব।” পুলিশের বিরুদ্ধে দেহ অপহরণের চেষ্টা এবং কর্মসূচির সময় বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে তারা নবান্নের অভিযানে অংশ নিয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও হাঁটতে প্রস্তুত থাকার সংকল্প প্রকাশ করেছেন।
সরকারি উদ্যোগ দ্রুত নেওয়া না হলে এই আন্দোলন তীব্রতর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ অনেকে মনে করেন এই ঘটনার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত চাকরিহারা শিক্ষকদের কষ্ট প্রকাশ পাচ্ছে এবং এখন তাদের দাবি স্পষ্ট করে তুলতে হচ্ছে।