হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী ভাদ্র মাস (Bhadra Mas) একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ সময়। পঞ্চম বঙ্গাব্দ মাস হিসেবে এটি সৌর ভাদ্র এবং চন্দ্রভাদ্র উভয় হিসেবেই পালিত হয়। এই সময় সূর্য সিংহ রাশিতে অবস্থান করে এবং পূর্ণিমা সাধারণত পূর্বভাদ্রপদ নক্ষত্রের আশেপাশেই ঘটে। তাই ধর্মীয় আচার, বিভিন্ন ব্রত ও উৎসব পালনে ভাদ্রের একটি আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
বিশ্বকর্মা পুজো:
ভাদ্র মাসের অন্যতম প্রধান উৎসব হল বিশ্বকর্মা পুজো। শিল্প, কারখানা, নির্মাণকাজ ও হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা বিশেষভাবে এই পুজো পালন করেন। এ বছর বিশ্বকর্মা পুজো পড়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর, বুধবার। এই দিন ভক্তরা কারখানা ও কার্যালয়ে বিশ্বকর্মা দেবতার আরাধনা করেন এবং নতুন সাফল্যের কামনা করেন।
অমাবস্যা ও পূর্ণিমা:
ভাদ্র মাসে দুটি বিশেষ তিথির তাৎপর্য অপরিসীম। ২৭ আগস্ট, মঙ্গলবার ভাদ্র অমাবস্যা উদ্যাপন হবে, যা শ্রাদ্ধকর্ম ও তিথি পালনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে, ৭ সেপ্টেম্বর, রবিবার ভাদ্র পূর্ণিমা অনুষ্ঠিত হবে, যেদিন নানা পূজা-পার্বণ এবং বিশেষ আচার পালিত হয়।
ভাদ্র মাসে বিয়ের দিন:
সাধারণভাবে ভাদ্র মাসকে বিয়ের জন্য অশুভ বা নিষিদ্ধ ধরা হয়। তবে এ বছর সুতহিবুক যোগের কারণে কিছু হাতেগোনা শুভ সময় তৈরি হয়েছে। সেই বিশেষ দিনগুলিতে নির্দিষ্ট লগ্ন অনুসারে বিবাহ সম্পন্ন করা যাবে। যেমন—
১৮ অগস্ট, ২৪ অগস্ট, ২৫ অগস্ট ও ২৮ অগস্ট তারিখগুলোতে রাতের নির্দিষ্ট সময়ে বিয়ের সুযোগ থাকবে।
সেপ্টেম্বর মাসে ৪, ৫, ৯ এবং ১৪ তারিখে ভাদ্রের বিশেষ লগ্ন অনুসারে বিয়ে সম্পন্ন করা যাবে।
পূজা-পার্বণ ও একাদশী
ভাদ্র মাসে অজা একাদশী, পদ্মা একাদশী, মন্থান ষষ্ঠী, রাধাষ্টমী, সৌভাগ্য চতুর্থী ইত্যাদি নানা তিথি পালিত হবে। এর মধ্যে ১৯ আগস্ট অজা একাদশী, ২৭ আগস্ট গণেশ চতুর্থী, ২৮ আগস্ট নাগপঞ্চমী, ২৯ আগস্ট মন্থান ষষ্ঠী, ৩ সেপ্টেম্বর পদ্মা একাদশী, এবং ৩১ আগস্ট রাধাষ্টমী বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
যদিও ভাদ্র মাসে বিয়ে সচরাচর হয় না, কিন্তু খগোলীয় নিয়ম অনুযায়ী এ বছর বিশেষ কিছু দিন বিয়ের জন্য উন্মুক্ত থাকছে।
সব মিলিয়ে ভাদ্র মাস বাংলার মানুষদের কাছে একাধারে উৎসব, ব্রত, পূজা এবং বিশেষ দিনগুলির সমাহার। এই সময় গৃহস্থালী আচার থেকে শুরু করে শিল্পক্ষেত্রের পূজা—সব ক্ষেত্রেই ধর্মীয় আবহ তৈরি হয়, যা সমাজজীবনে নতুন মাত্রা যোগ করে।